My mind eating chyaka

পরী’র সাথে আমার পরিচয় প্রায় আড়াই বছর । আমার দেখা সবচেয়ে ভালো মেয়ে সে । মানুষ যে এত্তো ভালো হয়, তা ওর সাথে পরিচয় না হলে মনে হয় আমার জানাই হতো না ।

আমি ওকে অনেক ভালবাসতাম । সেও আমাকে ততটাই ভালোবাসতো । আমি তার জন্য পাগল ছিলাম । সে আমার প্রতি পাগল ছিলো কি না, তা জানি না । তবে ওর কথা-বার্তায় মনে হতো সেও আমার প্রতি পাগল ছিলো ।

আমাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো । ভালোবাসার ঝগড়া । আমি বলতাম, ঝগড়া করলে প্রেম বাড়ে । আমাদের ঝগড়াটার সময় হতো সর্বচ্চো ১৫ মিনিট । তার পর আবার ঠিক । সেই ভালোবাসা । ওর আর আমার ভালোবাসা ছিলো মানসিক ভালোবাসা । শারীরিক ভালোবাসা না । ওকে কখনোই আমি খারাপ চোখে দেখি নি । আর সেও সেইরকম মেয়ে ছিলো না । অনেক ভদ্র একটা সহজ সরল মেয়ে ।

বলে রাখা ভালো, আমরা গ্রামে থাকতাম । আমরা সেম ক্লাসেই পড়াতাম । পড়ালেখা করার জন্য সে শহরে চলে যায় । আর আমি গ্রামে থেকেই পড়ালেখা করতে থাকি । শহরে যাওয়ার পর থেকেই ওর মধ্যে একটা পরিবর্তন আসতে থাকে । আগে যেই মেয়ে আমি একদিন না কথা বললে কাঁদত, সেই মেয়ে এখন আর কাঁদার কোন বিষয় হলেও কাদে না ।

আমার সাথে ঝগড়া হয় এর মাঝে ।

ও আমাকে খারাপ ছেলে বলে । আমি রাগ করে ফোন রেখে দেই । তার পর অপেক্ষায় থাকি, সে আমাকে স্যরি বলবে, আগের মতো সেই হাসি মুখে বলবে “কি এই পাগলিটাকে কি ক্ষমা করে দেয়া যায় না??”

অপেক্ষায় থাকি আগের মতোম মেসেজ পাঠাবে, “Sorry Baby , Love You Baby, Miss You Baby, Kiss You Baby… :* ” না পাঠায় নি । বড্ড চেঞ্জ হয়ে গেছে সে । কল দিলো না । মেসেজ ও পেলাম না । ১৬ দিন অপেক্ষা করতে করতে আর থাকতে না পেরে যখন আমিই কল দিলাম, তখন আমি পুরাই শক্‌ড !!! আমার কল ধরলো না । ৬২/৬৩ বার কল দেয়ার পর সুমতি হলো উনার, ধরলেন । আমি সেই পুরোনও অধিকারে বলেই ফেললাম, “এই আমি আর তোমার সাথে কথা বলবো না।“ মুখে বিরক্তির ভাব এনে উত্তর দিলো, “তো???আমি কি করতে পারি?” এইটা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়লাম । তার প্রতি ছিলো আমার অগাধ বিশ্বাস । মনে করতাম, হয়তো আমাকে কখনোও আমার ছায়াও ছেড়ে চলে যেতে পারে । কিন্তু এই মেয়েটা আমার সাথে থাকবে, যতদিন বেচে আছি ।

সি বিশ্বাসেই সে পানি ঢাললো । যাই হোক, আমাকে আরোও সারপ্রাইজ দিয়ে তিনি বললেন, তি নাকি নতুন একটা রিলেশানে জড়িয়ে গেছেন । আর আমার সাথে ২বছরে যা হয় নাই, ওই ছেলের সাথে নাকি ৩মাসেই অঈসব হয়ে গেছে ।

আমি এগুলো শুনে শুধু তার বলা সেই কথাগুলো মনে পড়লো, “ মনে রেখো সামির, তুমিই আমার জীবনের প্রথম, এবং আমার জীবনের শেষ । যদি কখনোও তোমার সাথে আমার মিল নাও হয়, তবে এটা মেনে নিও যে আমার জীবনে আর কেউ আসে নি।“ “আমি কখনোই বিয়ের আগে তোমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়বো না । বিয়ের পর যা খুশি করিও“

কথা গুলো মনে করলাম। আর নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি এসে গেলো ।

যে মেয়েকে একদিন আমি বলেছিলাম, “ আমি আর তোমার সাথে রিলেশান রাখবো না। আমায় ক্ষমা কর প্লিজ ।“ ৭ ঘন্টা পর যখন আবার কল দিয়েছিলাম, তখন কেদে কেদে বলেছিলো, “ আমাকে ছেড়ে যেও না। প্লিজ ।আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না ।“ আমি এমনিতেই তাকে ছেড়ে থাকার কথা কখনোওম ভাবি নি । তার উপর আবার তার কান্না??? আমি কি এতটাই পাষাণ ?? আমি পারি নি । আমি পারি তাকে ভুলে যেতে ।

যাই হোক, গত ৪ মাস ধরে ওকে অনেক বার স্যরি বলেছি । হাত কেটে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছি । কোন উত্তর নাই । জানেন, এখন তো আমি এতোটাই পর হয়ে গেছি যে আমি এখন তার ব্লক লিষ্টে ।

শুনেছি ওই ছেলেটার সাথে নাকি রিক্সায় করে ঘুরে বেড়ানো হয়। এগুলা আমাকে ভিতরে ভিতরে বার বার হত্যা করে । প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আমি কাদি । ৪ মাস ধরে এটাই আমার ডেইলি রুটিন । একদিনও মিস হয় নাই ।

আমি এখন নিজেই নিজের কাছে অপরাধী । বার বার মনে হয় আমিই ওকে হারিয়েছি । সব ভুল আমারই ছিলো। অনেক ভেঙ্গে পড়েছি আমি । পড়ালেখায় মনযোগ নাই । শরীরের প্রতিও যত্ন নেই না এখন । আগে হাসি আমার মুখে লেগেই থাকতো, কিন্তু এই চার মাসে হাতে গোনা কয়েকবার হেসেছি মনে হয় আমি ।

অনেক কষ্টে আছি আমি ।অনেক চেষ্টা করেছি ওকে ভোলার । পারি নি । আমি পারি নি ।

কি দরকার আমাকে এভাবে কষ্ট দিয়ে মারার??? সরাসরি খুন করে নিলেই পারতে আমায় ।

আমি আজোও পথ চেয়ে আছি ওর । ফোনে মেসেজের টোন শুনলেই মনে হয় , এই বুঝি ও মেসেজ পাঠালো । কিন্তু না, ভুল করেও যে কখনোও আমার নাম্বারে কোন কল/মেসেজ আসে না ।

** ওকে আমি পরী বলে ডাকতাম, আর ও আমায় সামির নামেই ডাকতো । তাই এই নামগুলোই ব্যাবহার করলাম ।

Collected, Source: Facebook Page-বাঁচতে হলে হাসতে হবে

No comments :

Post a Comment